ক্রীড়া ডেস্ক
রোববার কাতারের মাটিতে প্রথম বার মধ্যপ্রাচ্যে বিশ্বকাপ ফুটবল আসর বসতে যাচ্ছে। এটা যেন কোন ভাবেই মেনে নিতে রাজী নয় ইউরোপিয়ান আর আমেরিকার মানুষ গুলো।
আসর মাঠে গড়ানোর এক বছর আগে বিদেশী শ্রমিকদের উপর অমানবিক আচরণেন অভিযোগ দিয়ে কাতার সকারের উপর আক্রমণ শুরু। সরাসরি স্বাগতিক দেশ কাতারকে বাতিল করতে আবেদন করা, জার্মান মন্ত্রীর অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য সবই শুনেছে বিশ্ব।
এবার শুরু হয়েছে ইরানী ফুটবল দলকে নিয়ে সমালোচনা আর তাদের নিচু করে ফোকাস নষ্ট করার একটি জঘন্য পরিকল্পনা। যাতে করে ইরানী ফুটবল দল বিশ্বকাপ আসরে ভাল ফলাফল করেতে না পারে। মানসিক ভাবে যদি আগে ভাগে আঘাত করে সফল হওয়া যায় তাহলে ইউরোপিয়ান আর আমেরিকানরা সফল হবে।
এ বছর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগালের বিপক্ষে ইরান একটি প্রীতি ম্যাচ খেলছে। রেফারি যখন ১-১ ড্রয়ে চূড়ান্ত বাঁশি বাজান, তখন আনন্দ উদযাপন করা হনি। খেলোয়াড়রা খুশি মনে হয় না, কোচিং স্টাফও না। মাঠের বাইরে ইরানি ভক্তরা ছিল না। এবার নভেম্বরে কাতার বিশ্বকাপে ইরানকে নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। আগে কি হয়েছে বার সামনে কি হবে, সেটা নিয়েই ইউরোপিয়ানরা বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সঙ্গে আমেরিকার উদ্দেশ্যে মুলক আক্রমণের ধারা তো অব্যাহত আছে সব সময়ই।
গেল সেপ্টেম্বরে ইরানি কর্তৃপক্ষ ভাড়া করা স্থানীয় নিরাপত্তার বাহিনী দ্বারা স্টেডিয়ামে দর্শকদের প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। তা সত্ত্বেও দর্শকরা বাইরে তাদের সেট করা মেগাফোন এবং লাউড স্পিকারের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠস্বর শোনাতে সক্ষম হয়েছে। আসলে তারা এত জোরে শব্দ করছিল যে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি ছিল নিঃশব্দ ভাবে ম্যাচটি সম্প্রচার করেছিল। এসবও বিশ্বকাপ আসরে ইরানের মাঠে নামার আগে আলোচনায় আনছে ইংল্যান্ড আর আমেরিকানরা।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইরানের জীবন নাটকীয় সরকার বিরোধী বিক্ষোভের একটি ঘটনা প্রাধান্য পেয়েছে। যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশটির ইসলামী প্রজাতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। ইরানের নৈতিকতা পুলিশ তাদের কঠোর হিজাব নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে আটক ২২ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যুর কারণে বিক্ষোভগুলি ছড়িয়ে পড়ে। মাঠের বাইরে তারা স্লোগান দিচ্ছিল: “তার নাম বল: মাহসা আমিনী।”
মাহসা-র ঘটনাকে পুঁজি করে ইরানী ফুটবল দলকে বিশ্বকাপ থেকে বাদ দিতে ইউরোপিয়ান গোষ্ঠি আর আমেরিকা ফিফার কাছে আবেদনও করেছে। কিন্তু সে পথে হাটেনি ফিফা। কাতারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সোমবারের উদ্বোধনী ম্যাচে ভক্ত বা খেলোয়াড়রা কীভাবে আচরণ করবে তা স্পষ্ট নয় – তবে সবাই দেখবে।
সূত্র : বিবিসি